Tuesday 14 June 2011

আজ বালাগঞ্জের আদিত্যপুর গণহত্যা দিবস

উজ্জ্বল দাশ, ওসমানীনগর ঃ
আজ বালাগঞ্জের আদিত্যপুর গণহত্যা দিবস। ১৯৭১ সালের ১৪ই জুন আদিত্যপুরে পাকিস্তানী বাহিনীর নির্মম গণহত্যার শিকার হন আদিত্যপুর, সত্যপুরসহ বিভিন্ন এলাকার ৬৩জন নিরিহ মানুষ।নির্যাতনের শিার হন অর্ধ শতাধিক মহিলা ও শিশু। জানা যায়, ১৯৭১ সালের ১৪ই জুন সোমবার সকালে ৪টি সাঁেজায়া জিপ নিয়ে ২৫-৩০জন পাকিস্তানী সেনা এসে হাজির হয় আদিত্যপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে। রাজাকার আব্দুল আহাদ চৌধুরী (ছাদ মিয়া), মসরু মিয়া শান্তি কার্ড দেওয়া হবে জানিয়ে গ্রামের পুরুষদের বিদ্যালয় মাঠে জড়ো হতে বলে। ছাদ মিয়ার কথা আশ্বস্থ হয়ে গ্রামের ৬৫জন পুরুষ জড়ো হয় স্কুল মাঠে। পাকসেনারা অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে সবাইকে রশি দিয়ে বেঁধে এক লাইনে দাঁড় করায়। কোন কিছু বুঝার আগেই পাক সেনাদের বন্ধুক থেকে বেরিয়ে এলো রাশি রাশি গুলি। বাঁচাও বাচাঁও শব্দে কেঁদে উঠলো পুরো গ্রাম। আবারো চললো শত শত গুলি। মুহুর্তেই প্রাণ হারান শীশ চন্দ্র সেন, অখিল দাস, কবিন্দ্র বাবুসহ ৬৩জন হিন্দু ধর্মালম্বী মানুষ, ২জন আহত অবস্থায় রা পান। গণহত্যার পর অত্র এলাকায় ব্যাপক লুন্টন, নারী নির্যাতন চালায় পাকিস্তানী বাহিনী ও রাজাকাররা।
শহীদদের লাশ ৩দিন বিদ্যালয় মাঠে পড়ে থাকার পর ১৭ই জুন  সকালে গোপনে কোন রকম ধর্মীয় আচার ছাড়াই লাশগুলো মাটি চাঁপা দেয়া হয়। ২২শে জুন  মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি এমএজি ওসমানীর উপস্থিতিতে মাটি খুঁড়ে লাশ বের করে পোষ্টমর্টেমের জন্য প্রেরণ করা হয় সিলেট সদর হাসপাতালে। সেখানে দেশী ও আন্তর্জাতিক সাংবাদিকদের সামনে লাশের সংখ্যা গণণা করা হয়। তারপর লাশগুলো আবার আদিত্যপুর এনে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পূর্বপাশে সমাহিত করা হয়।  দীর্ঘদিন অবহেলিত থাকার পর বর্তমান সরকার মতায় এসে আদিত্যপুর গণকবর সংস্কারে হাত দেয়। ২টি প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে আদিত্যপুর গণকবর ও রাস্তা সংস্কার এবং চলতি প্রকল্পে ৩লাখ টাকা ব্যয়ে স্মৃতি সৌধ নির্মাণ করা হয়েছে। তবে শহীদদের কোন নামফলক বসানো হয়নি।