Wednesday 15 May 2013

মুক্তিযুদ্ধের মহামানব এম এ জি ওসমানী

মোঃ কয়েছ মিয়া :: মহম্মদ আতাউল গনি ওসমানী। যিনি জেনারেল এম এ জি ওসমানী নামেই পরিচিত। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক। সিলেটের রত্ন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক, গণতন্ত্রের আপোষহীন সৈনিক, আজীবন গণতন্ত্রী, সংকল্পে অটল, নিঃস্বার্থ দেশপ্রেমিক, পরমত সহিষ্ণু, সততা, কর্মনিষ্ঠা ও সময়ানুবর্তিতার আদর্শ পুরুষ আতাউল গণি ওসমানী কখনও কোন ধরণের লোভ লালসার স্বীকার হননি। স্পর্শ করতে পারেনি কোন অসাধু পন্থা। দেশে গণতন্ত্রের
বিকাশই ছিল তার আজীবন এক সাধনা। তিনি স্বাধীনতা সংগ্রামসহ সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন এবং জাতির সংকটময় মুহূর্তে মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক হয়ে দেশকে আশু ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করেছিলেন। জাতির সংকটময় মুহূর্তে তার মতো জাতীয় নেতা শুধু সিলেটেই নয় সারা বাংলাদেশে বড় বেশি প্রয়োজন। তিনিই প্রথম ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস এর প্রতিষ্ঠাতা। যার সুনিপুণ রণকৌশল ও ধীরে চলো নীতি এদেশকে রক্ষা করেছিল এক মহাবিপর্যয়ের কবল থেকে। জেনারেল (অবঃ) এম এ জি ওসমানি এক বীর সেনানীর নাম । যিনি বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়ে আমাদের একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র উপহার দিয়েছিলেন। বঙ্গবীর এম এ জি ওসমানী তার জীবন দেশ ও জাতির জন্য উৎসর্গ করে অমর  হয়ে রয়েছেন।
জন্ম :
ওসমানীর জন্ম ১৯১৮ সালের ১লা সেপ্টেম্বর সুনামগঞ্জে। তাঁর পিতৃপুরুষের বাড়ী সিলেট জেলার বালাগঞ্জ উপজেলার (বর্তমানে ওসমানীনগর থানা’র) দয়ামীরে। তাঁর পিতা খান বাহাদুর মফিজুর রহমান, মাতা জোবেদা খাতুন। খান বাহাদুর মফিজুর রহমানের দুই ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে সবার ছোট ছেলে ওসমানী। ওসমানীর জন্মের প্রাক্কালে ১৯১৮ সালে খান বাহাদুর মফিজুর রহমান তৎকালীন আসামের সুনামগঞ্জ সদর মহকুমায় সাব-ডিভিশনাল অফিসার হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন। তাঁদের বসবাস ছিল সুনামগঞ্জ সদরেই। এখানেই জন্ম হয় ওসমানীর।
শিক্ষা :
পিতার চাকরির সূত্রে তাঁর শৈশব-কৈশোর কেটেছে বিভিন্ন জায়গায়। তাই কিছুদিন পর বদলির আদেশ নিয়ে সুনামগঞ্জ থেকে চলে যেতে হয় গোহাটিতে। আর সেখানেই ওসমানীর প্রাথমিক শিক্ষার শুরু হয়। ১৯২৩ সালে 'কটনস্ স্কুল অব আসাম'-এ ভর্তি হন তিনি । লেখা পড়ায় যে তিনি খুবই মনোযোগী ছিলেন তার প্রমাণ হলো স্কুলের প্রত্যেক পরীক্ষায় প্রথম হতেন । ১৯৩২ সালে ওসমানী সিলেট গভর্নমেন্ট পাইলট হাই স্কুল এ ভর্তি হন । তৎকালীন সময়ে সিলেটের এই স্কুলটি 'ক্যালকাটা ইউনিভর্সিটির' অধীনে ছিল । ১৯৩৪ সালে সিলেট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিক পাস করেন অসাধারণ কৃতিত্বের সাথে। সমগ্র ব্রিটিশ ভারতে তিনি প্রথম স্থান লাভ করেন । এই অসাধারণ কৃতিত্বের জন্য ব্রিটিশ সরকার এম. এ. জি. ওসমানীকে প্রাইওটোরিয়া পুরস্কার প্রদানের মাধ্যমে সম্মানিত করে। আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন ১৯৩৮ সালে।
সেনাবাহিনীর জীবন :
বিশ্ববিদ্যালয় শেষ করে ওসমানী তৎকালীন সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। ১৯৩৯ সালে তিনি রয়্যাল আর্মড ফোর্সে ক্যাডেট হিসেবে যোগ দেন। দেরাদুনে ব্রিটিশ - ভারতীয় মিলিটারি একাডেমীতে প্রশিক্ষণ শেষে তিনি ১৯৪০ সালে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে যোগ দেন কমিশনড অফিসার হিসেবে। সে সময় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলছিলো। ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর একটি ব্যাটেলিয়ানের কমান্ডার হিসেবে তিনি বার্মা (মিয়ানমার) সেক্টরে কাজ করেন। ১৯৪২ সালে মেজর পদে উন্নীত হন। ১৯৪২ সালে ওসমানী ছিলেন ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের সর্বকনিষ্ঠ মেজর। ১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হলে ওসমানী ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে লং কোর্স পরীক্ষা দিয়ে উচ্চস্থান লাভ করেন । সে বছর তিনি ইন্ডিয়ান পলিটিক্যাল সার্ভিসের জন্যও মনোনীত হন। কিন্তু তিনি সামরিক বাহিনীতেই থেকে যান।  দেশ বিভাগের পর ১৯৪৭ সালের ৭ই অক্টোবর ওসমানী পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। এসময় তাঁর পদমর্যাদা ছিল লেফটেন্যান্ট কর্নেলের। ১৯৪৯ সালে তিনি চীফ অফ জেনারেল স্টাফের ডেপুটি হন। ১৯৫১ সনে তিনি ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট এর ১ম ব্যাটেলিয়নের অধিনায়ক নিযুক্ত হন। এর পর তিনি চট্টগ্রাম সেনানিবাস প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৫৫ সাল পর্যন্ত তৎকালীন পূর্ববাংলার আরও  কয়েকটি আঞ্চলিক স্টেশনের দায়িত্বও তিনি সফলতার সাথে পালন করেন। পরবর্তীকালে তিনি ১৪তম পাঞ্জাব রেজিমেন্ট এর ৯ম ব্যাটেলিয়ানের রাইফেলস কোম্পানির পরিচালক, ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস (ই.পি.আর.)-এর অতিরিক্ত কমান্ড্যান্ট, সেনাবাহিনীর জেনারেল স্টাফ অফিসার প্রভৃতি দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৫৬ সালে তিনি কর্নেল পদমর্যাদা লাভ করেন এবং সেনাবাহিনীর হেড কোয়ার্টারের জেনারেল স্টাফ এন্ড মিলিটারি অপারেশনের ডেপুটি ডিরেক্টরের দায়িত্ব পান। ১৯৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধে তিনি পাকিস্তানের হয়ে যুদ্ধ করেন। 'ডেপুটি ডাইরেক্টর অব মিলিটারি অপারেশন' হিসেবে যুদ্ধরত বিভিন্ন সামরিক হেড কোয়ার্টারে যোগাযোগ করতেন তিনি। পাক-ভারত যুদ্ধ যখন শেষ হয় তখন তাঁর বয়স চল্লিশের উপরে। ১৯৬৬ সালের মে মাসে তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনী থেকে অবসরকালীন ছুটি নেন এবং পরের বছর (১৯৬৭ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি) অবসর গ্রহণ করেন।
রাজনৈতিক জীবনের সূচনা :
১৯৭০ সালে তিনি আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। আওয়ামী লীগ প্রার্থী হিসেবে '৭০-এর নির্বাচনে ফেঞ্চুগঞ্জ-বালাগঞ্জ-বিশ্বনাথ এলাকা থেকে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন।
মুক্তিযুদ্ধ :
মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে ওসমানী সীমান্ত পার হয়ে ভারতে প্রবেশ করেন। ১১ এপ্রিল (১৯৭১) প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদ স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে ভাষণ দেন । ঐ ভাষণে তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অবকাঠামো গঠনের কথা উল্লেখ করে এম. এ. জি. ওসমানীকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান সেনাপতি হিসেবে ঘোষণা দেন। উল্লেখ্য যে ১০ এপ্রিল স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র জারী ও সরকার গঠন করা হয় এবং পরবর্তীকালে ১৭ এপ্রিল মুজিবনগরে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার শপথ গ্রহণ করে। ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল গঠিত হয় মুজিবনগর সরকার, ওসমানীকে করা হয় মুক্তিবাহিনীর প্রধান সেনাপতি। ওসমানী'র নির্দেশনা অনুযায়ী সমগ্র বাংলাদেশকে ১১টি সেক্টরে ভাগ করা হয়। প্রতিটি সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার হিসেবে এক একজন সেনাবাহিনীর অফিসারকে নিয়োগ দেয়া হয়। বিভিন্ন সেক্টর ও বাহিনীর মাঝে সমন্বয়সাধন করা, রাজনৈতিক নেতৃত্বের সাথে যোগাযোগ রাখা, অস্ত্রের যোগান নিশ্চিত করা, গেরিলা বাহিনীর প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা - প্রভৃতি কাজ সাফল্যের সাথে পালন করেন ওসমানী। ১২ এপ্রিল থেকে এম. এ. জি. ওসমানী মন্ত্রীর সমমর্যাদায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান সেনাপতি হিসেবে যুদ্ধ পরিচালনার দায়িত্বভার গ্রহণ করেন । রণনীতির কৌশল হিসেবে প্রথমেই তিনি সমগ্র বাংলাদেশকে ভৌগোলিক অবস্থা বিবেচনা করে ১১টি সেক্টরে ভাগ করে নেন এবং বিচক্ষণতার সাথে সেক্টরগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে থাকেন। পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ছিল দক্ষ এবং সংখ্যায় অনেক বেশি। এই বিবেচনায় ওসমানীর রণকৌশল ছিল প্রথমে শত্রুকে নিজেদের ছাউনিতে আটকে রাখা এবং তাদেরকে যোগাযোগের সবগুলো মাধ্যম হতে বিছিন্ন করে রাখা। এজন্য এম. এ. জি. ওসমানী মে মাস পর্যন্ত নিয়মিত পদ্ধতিতে যুদ্ধ পরিচালনা করেন । মে মাসের পর তাঁর মনে হয় প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম সংখ্যক সৈন্য নিয়ে শত্রুকে ছাউনিতে আটকে রাখা গেলেও ধ্বংস করা সম্ভব নয়। এ বিষয়টি তিনি সরকারকে জানিয়ে যুদ্ধে কৌশলগত পরিবর্তন আনেন । প্রাক্তন ইপিআর এর বাঙালি সদস্য, আনসার, মোজাহেদ, পুলিশ বাহিনী ও যুবকদের নিয়ে একটি গণবাহিনী বা গেরিলাবাহিনী গঠন করেন।
মুক্তির সংগ্রামে এম, এ. জি. ওসমানীর হাতে কোনো নৌবাহিনী ছিল না। তবে নিয়মিত নৌবাহিনীর কিছু অফিসার এম. এ. জি. ওসমানীর সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখতেন । তাছাড়া ফ্রান্সের জলাভূমিতে থাকা পাকিস্তানের ডুবোজাহাজের কিছু সংখ্যক কর্মীও মুক্তিবাহিনীর সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন । কিছুদিন পর এম. এ. জি. ওসমানী তাদের এবং কিছু সংখ্যক গেরিলা যুবক নিয়ে একটি নৌ-কমান্ডো বাহিনী গঠন করেন। আগস্টের মাঝামাঝিতে তাঁরা নদীপথে শত্রুর চলাচল প্রায় রুদ্ধ করে দেন। নৌবাহিনী গঠনের ফলে একটা বড় ধরনের সংকটের অবসান হলেও দেশ স্বাধীন হবার আগে আগে আরও একটা সঙ্কট এম. এ. জি. ওসমানী অনুভব করেন। সেটা হচ্ছে তাঁর হাতে কোনো বিমানবাহিনী ছিল না। শেষের দিকে দুটি হেলিকপ্টার, ও একটি অটার আর তাঁর নিজের চলাচলের জন্য একটি ডাকোটা নিয়ে ছোট্ট একটি বিমানবাহিনী গঠন করেছিলেন তিনি।
পাকবাহিনীর আত্মসমর্পণ :
পাকিস্তানী বাহিনী ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ তারিখে মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় সামরকি বাহিনীর যৌথ কমান্ডের কাছে আত্মসমর্পণ করে। বাংলাদেশ স্বাধীন হয়। এই আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে মুক্তিবাহিনীর প্রধান সেনাপতি জেনারেল ওসমানী অনুপস্থিত ছিলেন। আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে ওসমানী উপস্থিত না থাকার কারন ছিল আর্মি প্রটোকল। আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে ভারতের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন ভারতীয় সেনাবাহিনীর পূর্ব ফ্রন্টের অধিনায়ক লে. জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরা। অন্যদিকে পাকিস্তানের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পূর্ব ফ্রন্টের প্রধান লে. জেনারেল নিয়াজী। এরা দুজনেই ছিলেন আঞ্চলিক প্রধান। অন্যদিকে ওসমানী ছিলেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান। তাই সেনাবাহিনীর প্রটোকল রক্ষার্থে কোন সেনাবাহিনীর আঞ্চলিক প্রধানের সাথে তিনি কোন অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেন না। ওসমানি নিজেই এ বিতর্কের জবাব দিয়ে গেছেন।
যুদ্ধপরবর্তী জীবন :
১৯৭১ সালের ২৬শে ডিসেম্বর তাঁকে বাংলাদেশ আর্মড ফোর্সের জেনারেল পদে নিয়োগ দেয়া হয়। ১৯৭২ সালে দায়িত্ব থেকে অবসর নেন, মন্ত্রীসভায় যোগ দেন অভ্যন্তরীণ নৌ যোগাযোগ, জাহাজ ও বিমান মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে। ১৯৭৩ সালের মার্চে স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথম সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ঐ নির্বাচনে ওসমানী তাঁর নিজের এলাকা থেকে অংশ নেন এবং নির্বাচনে অভাবনীয় সাফল্য লাভ করেন। ১৯৭৩ এর নির্বাচনে ওসমানী ৯৪ শতাংশ ভোটে বিজয়ী হয়েছিলেন। ডাক, তার, টেলিযোগাযোগ, অভ্যন্তরীণ নৌ যোগাযোগ, জাহাজ ও বিমান মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেন। ১৯৭৪সালের মে মাসে মন্ত্রীসভা থেকে পদত্যাগ করেন। ১৯৭৫ সালে সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে একদলীয় বাকশাল ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হলে তিনি সংসদ সদস্যপদ এবং আওয়ামী লীগের সদস্যপদ ত্যাগ করেন। সে বছর ২৯শে আগস্ট খন্দকার মোশতাক আহমেদের প্রতিরক্ষা বিষয়ক উপদেষ্টা পদে নিয়োগ পান, তবে ৩রা নভেম্বর জেলহত্যার ঘটনার পর পদত্যাগ করেন। ১৯৭৬সালের সেপ্টেম্বর মাসে ওসমানী 'জাতীয় জনতা পার্টি' নামে নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করেন। ১৯৭৮ ও ১৯৮১ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তিনি অংশগ্রহণ করেন। ১৯৭৮ সালের ৩রা জুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে জিয়াউর রহমান জয়লাভ করেন। এই নির্বাচনে মোট ১০জন প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেনঃ
১। জনাব আজিজুল ইসলাম ২। জনাব আবুল বাশার ৩। প্রিন্সিপাল এ, হামিদ (এম.এস.সি) ৪। হাকিম মাওলানা খবিরুদ্দিন আহমেদ ৫। মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান (বি,ইউ, পি,এস,সি) ৬। জেনারেল (অবঃ) মুহাম্মদ আতাউল গনি ওসমানি ৭। জনাব মোঃ আব্দুস সামাদ ৮। জনাব মোঃ গোলাম মোর্শেদ ৯। শেখ মোঃ আবু বকর সিদ্দিক ১০। সৈয়দ সিরাজুল হুদা
১৯৭৮ সালে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে জেনারেল (অবঃ) এম.এ.জি. ওসমানী অংশ নেন। তিনি জাতীয় জনতা পার্টির চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি মনোনীত হয়েছিলেন,গণ ঐক্য জোট এবং ৫টি রাজনৈতিক জোটের যথাঃ জাতীয় জনতা পার্টি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, জাতীয় আওয়ামী পার্টি (মোজাফ্ফর), বাংলাদেশ পিপলস লীগ, গণ আজাদী লীগ। ১৯৮১ সালে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ৩৯ জন প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন। ঐ নির্বাচনে জয়লাভ করেন বিচারপতি আব্দুস সাত্তার।
মৃত্যুবরণ :
ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসার্থে লন্ডন থাকাকালীন ১৯৮৪ সালের ১৬ই ফেব্রুয়ারি এম. এ. জি. ওসমানী মৃত্যুবরণ করেন। তাঁকে পূর্ণ সামরিক মর্যাদায় সিলেটে সমাহিত করা হয়।
স্বীকৃতি :
তাঁর স্মরণে ঢাকায় গড়ে উঠেছে ‘ওসমানী উদ্যান’ ও স্থাপিত হয়েছে বাংলাদেশ সচিবালয়ের বিপরীতে ‘ওসমানী মেমোরিয়াল হল’। এছাড়া তার সিলেটস্থ বাসভবনকে পরিণত করা হয়েছে জাদুঘরে। সরকারি উদ্যোগে সিলেট শহরে তার নামে একটি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। তাঁর নামে নামকরণ করা হয়েছে সিলেট বিমান বন্দর। প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে ওসমানীনগর থানার দয়ামীরে ওসমানী স্মৃতি যাদুঘর ও গ্রন্থাগার। বালাগঞ্জ উপজেলাকে ভেঙ্গে যে থানা ঘোষণা করা হয় তাঁরই নামে ‘ওসমানীনগর থানা’। নামকরণ করা হয়েছে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর। সিলেটে বঙ্গবীর রোডসহ অসংখ্য স্বীকৃতি।
তথ্য সূত্র : উইকিপিডিয়া ও কিছু তথ্য নিজস্ব লিখনীতে আপডেট।

বি:দ্রঃ এছাড়া জীবনীটির অসম্পুর্ণ কোন তথ্য বাদ পড়লে আপনি সহযোগিতা করতে পারেন। আপনার  সঠিক তথ্য ধন্যবাদের সহিত এই অলাভজনক সাইটে গ্রহণ করা হবে।