Saturday 6 April 2013

ওসমানীনগরে বন্যা আশ্রয় বাঁধ

মোঃ কয়েছ মিয়া :: স্বাধীনতার দীর্ঘ ৪১বছর পর সিলেটের ওসমানীনগরের একটি অবহেলিত রাস্তা দুর্দশার সিঁড়ি বেয়ে উন্নয়নের ছোঁয়ায় আলোকিত হতে যাচ্ছে। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে উন্নয়নের আশার আলো ছড়িয়ে পড়েছে। বিগত দিনগুলোতে এলাকার কয়েক হাজার মানুষ রাস্তা নির্মাণ না হওয়াতে চলাচলে চরম ও সীমাহীন দূর্ভোগ শিকার
হয়েছিল। রাস্তাটির কাজ সম্পন্ন হলে উন্নয়নমুলক অন্যান্য এলাকার সাথে ওই এলাকার জনসাধারণের যোগাযোগের এক সেতুবন্ধন তৈরী হবে। যা ইতোপূর্বে অত্র এলাকাবাসী এ রাস্তা উন্নয়নের কথা ভাবে নি। কিন্তু বাস্তবে এ রাস্তার উন্নয়নের কাজ এখন দ্রুতগতিতে
এগিয়ে চলছে। এবং এই উন্নয়ন কর্মকান্ডের সম্পূর্ণ কৃতিত্ব সিলেট-২ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব শফিকুর রহমান চৌধুরী। এলাকাবাসী আগামী দিনে রাস্তাটি পাকাকরণের জন্য আশার প্রহর গুনছেন।
অনুসন্ধানে জানা যায়, রাস্তাটি থানার গোয়ালাবাজার ইউনিয়নের ভাগলপুর - মোতিয়ারগাঁও - হলিমপুর রাস্তা। রাস্তাটি ঢাকা-সিলেট মহসড়কের গুরুত্বপূর্ণ এলাকা কাগজপুর থেকে পশ্চিম দিকে ভাগলপুর, মোতিয়ার গাঁও, হলিমপুর, কলারাই একাংশ, গাভুরটিকি, লামা গাভুরটিকি, নলিকোনা, নুরপুর হয়ে প্রায় ১০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য। রাস্তাটি প্রতি বছর পানি এবং বন্যার সাথে যুদ্ধ করে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে ছিল। দীর্ঘদিন ধরে রাস্তাটির মাটি ভরাটের কাজ না হওয়ায় উপর্যুপরি বন্যার ভাঙ্গনে বড় আকারের গর্তের সৃষ্টি হয়ে দু’পাশের মাটি ধ্বসে পড়ছিল। সামান্য পানি হলেই রাস্তায় কোমর পানি থাকতো। তখন মানুষের চলার একমাত্র ভরসা ছিল নৌকা। এলাকাবাসী জানান নির্বাচনী বৈতরনী পার হবার কালে জনপ্রতিনিধিরা বারবার এই রাস্তার উন্নয়নের প্রতিশ্রুতির ফুলঝুড়ি ঢেলে দেন। এবং ভোট আদায় হয়ে গেলে প্রতিশ্রুতিগুলো মঞ্চেই থাকতো। কিন্তু এবার আমাদের দিকে সুদৃষ্টি দিয়েছেন মহাজোট সরকার তথা সিলেট-২ আসনের সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান চৌধুরী। এছাড়া রাস্তাটির কাজ হওয়ার জন্য অক্লান্ত প্রচেষ্টা করেছেন থানা স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা ভাগলপুর গ্রামের বিশিষ্ট ব্যক্তি বুলবুল মিয়া। বর্তমানে রাস্তাটি সমন্বিত দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রনালয়ের সিডিএমপি প্রকল্পের আওতায় ১৮ লাখ ৮২ হাজার ৯শত ৩৩টাকা টাকা ব্যয়ে নির্মিত হবে। যার প্রায় ৭০ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। রাস্তাটি বন্যা আশ্রয় বাধ প্রকল্প হিসেবে ধরা হয়েছে। গত ৬ মার্চ সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের কাগজপুর থেকে ভাগলপুর রাস্তা পর্যন্ত ১৩শ মিটার দৈর্ঘ্যের বন্যা আশ্রয় বাধের মাটি কাটার কাজের উদ্বোধন করেন বালাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম খান ও ইউপি চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মানিক। রাস্তাটিকে বন্যা আশ্রয় বাধ প্রকল্পের আওতায় আনতে সার্বিকভাবে দিকনির্দেশনা প্রদান করেছেন দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রনালয়ের যুগ্ন সচিব নেপুর আহমদ। রাস্তার নিম্নাংশ ৩০ ফুট প্রস্থ ও উপরাংশ ১৪ ফুট উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন হলে প্রায় ১০হাজার মানুষ উপকৃত হবেন বলে জানা গেছে। রাস্তাটির প্রকল্প চেয়ারম্যান হিসেবে কাজ করছেন ইউপি সদস্য শাহিন মিয়া। এলাকাবাসীর দাবী এই বন্যা আশ্রয় বাধটি ভাগলপুর-মুতিয়ার গাঁও-হলিমপুর-লামা গাভুরটিকি হয়ে কাতিয়া রাস্তার সাথে সংযুক্ত করা। কারণ উক্ত এলাকার পাশ ঘেষে বয়ে গেছে কুশিয়ারা নদী, নাটকিলা নদী, বানাইয়া-হারুয়া হাওর, সাতপুকুর, লোমবিল। বর্ষা মৌসুমে উক্ত পানির উৎসগুলো থেকে বন্যার পানি ব্যাপকভাবে প্রবেশ করে বসতবাড়িগুলোতে। এ এলাকা দিয়ে বন্যা আশ্রয় বাঁধটি নির্মিত হলে লক্ষাধিক মানুষ বন্যার কবল থেকে মুক্তি পাবে। প্রকল্পটির কাজ সম্পন্ন হলে সিলেট-২ আসনের সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান চৌধুরী আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন বলে সূত্র জানিয়েছে।
প্রসঙ্গত, বিগত আওয়ামী সরকার আমলে রাস্তার উন্নয়নের জন্য ভাগলপুর এলাকায় ১০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে একটি বক্স কালভার্ট নির্মিত হয়। কালভার্টি নির্মাণে তৎকালীন সচিব সফিউর রহমানের সার্বিক প্রচেষ্টা ছিল। কালভার্ট নির্মাণে তত্বাবধান করেন ভাগলপুর গ্রামের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব মোঃ নজরুল ইসলাম (আব্দুল হক)। এবং রাস্তার কাগজপুর নামক স্থানে আরেকটি কালভার্ট এলাকাবাসী ও প্রবাসীদের আর্থিক সহযোগীতায় প্রায় ৮ লক্ষ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়। সচেতন মহল মনে করেন ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে এই ধরনের উন্নয়ন একটি মাইল ফলক।