আমাদের গ্রাম

মোঃ কয়েছ মিয়া :: গ্রাম সম্পর্কে আলোচনা করতে হলে স্মরণ হয়ে যায় চিরচেনা পল্লী কবি জসিম উদ্দিনের ভাষা। গ্রামের অপরুপ সৌন্দর্যে বিমোহিত হয়ে কবি লিখেছিলেন- ‘‘আমাদের গ্রামখানি ছবির মতন মাটির তলায় এর ছড়ানো রতন।’’ ছায়া ঢাকা, পাখি ঢাকা গ্রামের শ্রী, গ্রাম প্রেমীদের ধ্যানের খোরাক যোগাত এভাবে। কিন্তু গ্রাম আজ প্রায় শ্রীহীন হয়ে পড়েছে। গোলাভরা ধান ও পুকুর ভরা মাছ আর আগের মত নেই। সংস্কারের অভাবে পুকুরগুলো মজে গেছে। ঘরে ঘরে আর নবান্নের উৎসব আর দেখা যায় না। গরুর পালের মাঝে মুখরিত হয়না রাখালের কাকলী মুখের কন্ঠস্বর। শিক্ষিত সমাজ গ্রামকে অবজ্ঞা করে চলছে শহর পানে। কবে আর গ্রামে এসব মানুষ ফিরবে তা বলা বাহুল্য। তাই আজ গ্রামবাসী নানা অশিক্ষায়-কুশিক্ষায় ও দুঃখদৈন্যে জর্জরিত। আজ গ্রামের অনেক মানুষ দু’বেলা দু’মোটো ভাত পেট ভরে খেতে পায় না। দিকে দিকে আজ ধবংসের প্রলয় মুহুর্মুহু বেজে উঠছে। এমন অবস্থা প্রায় সারা দেশের গ্রামের। অতীতে এদেশের  গ্রামগুলোর অবস্থা ছিল খুব উন্নত, আকর্ষনীয়, প্রাণবন্ত। মানুষের অভাব বলতে খুব কম ছিল। আমাদের দেশ তথা এলাকা গ্রাম প্রধান দেশ  দেশের শতকরা ৮০ ভাগ মানুষ এখনো গ্রামে বাস করে। এমনি একটি গ্রামের নাম ভাগলপুর(যার আভিধানিক অর্থ ‘নগরবিশেষ’  গ্রামের অনেক মানুষ বৃটেন(লন্ডন), মধ্যপ্রাচ্য প্রবাস ও শহরবাসী হয়ে গ্রাম আজ প্রায় লোকশুন্য। এক সময় এ গ্রামের বেশীর ভাগ মানুষ গ্রামে বসবাস করত। কিন্তু সুখের সন্ধানে পাড়ি জমিয়েছেন প্রবাসে। এ গ্রামের বীর সাহসী ইল্লাস মিয়া নামের একজন আমাদের দেশের মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহন করে ব্যাপক অবধান রেখেছেন। কিন্তু শেষ মুহুর্তে রাজাকারদের হাতে তাকে মরতে হয়েছে। তখন তাঁর স্বজনরা লাশটি পর্যন্ত খোঁজে পায়নি। গ্রামে সবচেয়ে উচ্চ শিক্ষত ব্যক্তি নজরুল ইসলাম আব্দুল হক তিনি গ্রামের উন্নয়নের জন্য ব্যাপক অবধান রয়েছে। তিনিও আজ সদূর প্রবাস লন্ডনে পাড়ি জমিয়েছেন মাঝে মধ্যে দেশে আসেন। প্রবাসে থেকেও দেশ গ্রামের মানুষকে খোঁজ খবর নেন। এ গ্রামের আরো অনেকে শিক্ষত আছেন। এ গ্রামে রয়েছে একটি প্রাইমারী বিদ্যালয়, একটি ক্লিনিক, দুইটি মসজিদ, একটি মাছের খামার।